Monday, February 27, 2017

মোমেন্ট অফ ইনার্শিয়া বা জড়তার ভ্রামক কী (Moment of Inertia)

মোমেন্ট অফ ইনার্শিয়া বা জড়তার ভ্রামক কী? ইনারশিয়াল মাস বা ইনারশিয়া (জড়তা)যেমন বস্তুর গতির আবির্ভাবে বাঁধা দেয় (একই ভাবে স্থিতির আবির্ভাবেও), যেটার জন্য বল ছাড়া তার গতির পরিবর্তন হতে চায় না, বস্তুতে যেটার পরিমাণ বাড়ার জন্য একই ত্বরণ তৈরিতে বল বাড়াতে হয়, তেমনি মোমেন্ট অফ ইনারশিয়া বা রোটেশনাল ইনারশিয়াও একটি রাশি যা বস্তুর ঘুর্ণন গতির পরিবর্তনে বাঁধা দেয়। একে  I দিয়ে প্রকাশ করি।

আমরা রৈখিক গতির ক্ষেত্রে একক ত্বরণের জন্য যে বল প্রয়োগ করতে হবে তাকে জড়তা বলি। একক ত্বরণ তৈরিতে বল বেশি প্রয়োগ করতে হচ্ছে, তাই জড়তাও বেশি হচ্ছে। আর যেহেতু F=ma তাই, F/a=m অর্থাৎ এই একক ত্বরণ তৈরিতে প্রযুক্ত এই বল হল যা জড়তা নির্দেশ করে তা হল ভর। ঘুর্ণন গতির ক্ষেত্রেও একক কৌণিক ত্বরণ তৈরিতে যে টর্ক প্রদান করতে হয় তা ঘুর্নন গতির জড়তা বা জড়তার ভ্রামক হয় যাকে আমরা আগে I দ্বারা চিহ্নিত করেছি। অর্থাৎ      τ/alpha= m r2  হবে এই জড়তার ভ্রামক বা রোটেশনাল ইনারশিয়া (বা বইয়ের মোমেন্ট অব ইনার্শিয়া)।



এতক্ষণে কিন্তু কেবল পার্টিকেলের জন্য মোমেন্ট অব ইনারশিয়ার কথা বললাম। যদি পার্টিকেল না হয়ে কোন বড় ভলিউম নিয়ে বস্তু হয় তবে এর এক একটি বিন্দু থেকে অক্ষের দূরত্ব এক এক রকম হবে। যে বিন্দুর সাপেক্ষে জড়তার ভ্রামক নির্ণয় করতে হবে সেই বিন্দু থেকে প্রত্যেক টা বিন্দু ভরের দূরত্ব সমান না। অসম দূরত্বের জন্য ঐখানে আমরা ক্যালকুলাস ইউজ করি ।

Thursday, February 23, 2017

সহজ ভাষায় এনট্রপি - Entropy and Its Physical Explanation with Significance

এনট্রপিঃ আমরা জানি মহাবিশ্বের শুরু হয়েছে এক প্রচণ্ড নিয়মতান্ত্রিক বিশৃঙ্খলার (big bang) মধ্য দিয়ে । সময়ের শুরু হয়েছে যেদিন এনট্রপির শুরু হয়েছে সেদিন থেকেই । এই মহাবিষে এনট্রপির মান দিন দিন বেরেই চলছে । যেদিন এই মহাবিশ্বের এনট্রপি সর্বোচ্চ হয়ে যাবে ওই দিন বিশৃঙ্খলা চরমে পৌছবে । এর মানে তখন আমাদের এ মহাবিশ্বে ব্যবহার্য কোন তাপশক্তি থাকবে না । আর এটাকে বলা হয় মহাবিশ্বের তাপীয় মৃত্যু ।
সহজ কথায় কোন সিস্টেমের বিশৃঙ্খলার পরিমাপ হচ্ছে এন্ট্রপি (Disorder & Randomness of a system )।
কোন সিস্টেম বা বাবস্থায় যদি কিছু পরিমাণ তাপশক্তি ইনপুট হিসেবে দেওয়া হয় তাহলে ঠিক ওই পরিমাণ তাপশক্তি আউটপুট হিসেবে পাওয়া যাবে না ।
কিছু কম পাওয়া যাবে । তাহলে বাকি তাপশক্তি গেল কোথায় ? বাকি তাপশক্তির কিছুটা অংশ সিস্টেম নিজে শুষে নিয়েছে । এই শুষে নেওয়ার ফলে ব্যবস্থাটি বা যন্ত্রটি গরম হয়েছে। আর বাকি অংশ বাবস্থাটীর অণুগুলো শুষে নিয়েছে । এই শুষে নেওয়া তাপশক্তির কিছু অংশ ব্যবহার করে অণুগুলোর গতিশক্তি বাড়ে , গতিশক্তি প্রাপ্ত হলেই এরা ছুটাছুটি করে এবং একে অপরের সাথে সংঘর্ষের মাধ্যমে এই গতিশক্তির কিছু পরিমাণ তাপশক্তি হিসেবে আমরা পাই । এটাই আউটপুট । এই যে আমরা একটা ব্যাবস্থায় কিছু পরিমাণ তাপ শক্তি দিলাম এবং এর ফলে অণুগুলো ছোটাছুটি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করল এটাই হল এনট্রপি ।





এখন প্রশ্ন হল এনট্রপি কি মাপা সম্ভব ?? এর সরাসরি উত্তর হল না । একটা লোহার দণ্ডের কথা বিবেচনা করা যাক । এর অনু-পরমানু গুলো সব সময় কম্পনশীল অর্থাৎ বিশৃঙ্খল ।এই যে লোহার অনুগুল জন্মবধি বিশৃঙ্খল ,এটা ওই পরমাণুগুলোর সহজাত এনট্রপি । এই উদাহরণ থেকে সহজেই বলে দেয়া যায় যে এই এনট্রপি মাপা আসলে কখনই সম্ভব না । তবে এনট্রপির পরিবর্তন মাপা সম্ভব । এটা মাপার জ ন্য যে সুত্র ব্যবহার করা হয় তা হল ds=    এখানে  মানে হল কতটুকু শক্তি দেয়া হয়েছে আর কতটুকু কাজ (শক্তি)পাওয়া যাবে তার পার্থক্য ।  T হলো তাপমাত্রার পরিমাপ । আর ds হলো এনট্রপির পার্থক্য ।
এখন তাপগতিবিজ্ঞানের কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাক । সমষো প্রক্রিয়া এবং রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ার এনট্রপির কি হয়? সমষো প্রক্রিয়ায়  তাপমাত্রার কোন পরিবর্তন হয় না । কিন্তু আশেপাশের পরিবেশের সাথে তাপের আদান প্রদান হয় । ফলে এনট্রপির নিট পরিবর্তন শুন্য থাকে ।রুদ্ধতাপীয়  প্রক্রিয়ায় তাপের আদান-প্রদান হয় না অর্থাৎ তাপ রুদ্ধ থাকে , dQ =0 তাই ধরে নেয়া যায় যে এনট্রপি স্থির থাকে । যদিও ।রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়ায় এনট্রপির কিছু পরিবর্তন ঘটে , তবে সেটা আনবিক পর্যায়ে ।

এখানে একটি প্রশ্ন থেকে যায় যে রাশিটি (এনট্রপি) একটি সিস্টেম এর কেবল পরিবর্তন ঘটাচ্ছে তার দরকারটা আসলে কোথায় ? আমরা যদি কোয়ান্তাম পর্যায়ে যাই তাহলে বুঝতে পারব এনট্রপি কতটা গুরুত্বপূর্ণ । বাহ্যিক ভাবে দেখলে প্রতিটি আনবিক বন্ধনে জড়িয়ে আছে এনট্রপি ।  এজন্যই রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তাপের উদগিরন বা শোষণ হয় । এনট্রপি না থাকে কোন আনবিক বন্ধন-ই সম্ভব হতো না । আর তাহলে হয়ত মহাবিশ্বে কোন বস্তুই থাকতো না । 

Tuesday, February 21, 2017

Torque টর্ক

টর্ক ( Torque ) ঃ একটি দরজা খোলার জন্য নির্দিষ্ট পরিমান বল যদি দরজার হাতলে (অক্ষ থেকে দূরে) প্রয়োগ করা হয় তাহলে সেটি খুলে যায়। এখন একই পরিমান বল যদি অক্ষের নিকটে প্রয়োগ করা হয় তাহলে দরজা মুভ করবেনা।অক্ষ থেকে যত দূরে বল প্রয়োগ করা হয় ততই দরজার মুভ করার প্রবনতা বেড়ে যায় অর্থাৎ দরজা সহজেই খুলে যায়।ঘুর্নায়মান বস্তুর উপর বল প্রয়োগের ফলে যে ঘুর্নন প্রবনতা তৈরী হয় তার পরিমাপ হচ্ছে টর্ক। টর্ক (Torque) বা বলের ভ্রামক বলতে একটি বস্তুকে কোন বল কোন অক্ষ,অবলম্বন বা পিভটের চারদিকে ঘোরানোর প্রবনতা বোঝায়। বল দ্বারা যেমন ধাক্কা বা টান বোঝায় তেমনি টর্ক বলতে অক্ষের চারদিকে কোন বস্তুর ঘূর্নন প্রবনতা বোঝানো হয়ে থাকে।গাণিতিকভাবে টর্ক হল কোন অক্ষের সাপেক্ষে ঘূর্ননশীল বস্তুর উপর ক্রিয়ারত বল এবং অক্ষ থেকে ঐ বস্তুর দুরত্তের ভেক্টর গুনফল।
সহজভাবে বলতে গেলে টর্ক দ্বারা কোন অক্ষের চারদিকে কোন বস্তুর ঘূর্নন প্রবনতার পরিমাপ বোঝানো হয়ে থাকে।ঊদাহরনস্বরুপ, কোন যন্ত্রে আটকানো একটি নাট বা বল্টু খুলতে হলে তাতে রেঞ্চ আটকিয়ে এর ঘোরানোর সময় রেঞ্চের হাতলে টর্ক সৃষ্টি হয়।

টর্ককে সাধারনত গ্রীক অক্ষর τ (টাউ) দ্বারা সূচিত করা হয়। তবে যখন এটিকে ভ্রামক বা বলের ভ্রামক হিসেবে বর্ননা করা হয় তখন এটিকে M দ্বারা সূচিত করা হয়ে থাকে। টর্কের মান তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করেঃ প্রযুক্ত বল (F), ব্যসার্ধ ভেক্টর (r) এবং বলের দিক ও ব্যসার্ধ ভেক্টরের মধ্যবর্তি কোণ (θ)। গানিতিক ভাবেঃ





τ হল টর্ক বা বলের ভ্রামক, r ঘূর্নন অক্ষ থেকে বলের প্রয়োগবিন্দুর দূরত্ত বা ব্যসার্ধ ভেক্টর, F বস্তুর উপর ক্রিয়ারত বল, × দ্বারা ভেক্টর গুনন প্রকাশ করা হয়েছে, θ দ্বারা F এবং τ এর মধ্যবর্তি কোণ।